বিটিবি নিউজ ডেস্ক: সরকারি চাকরিজীবীরা শিগগিরই বড় দুটি সুবিধা পেতে যাচ্ছেন। জাতীয় নির্বাচনের আগেই তাদের গৃহ নির্মাণ ঋণ এবং বর্ধিত বেতন দিতে সরকার উদ্যোগ নিয়েছে। সম্প্রতি অর্থ মন্ত্রণালয় থেকে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে গৃহ নির্মাণ ঋণ নীতিমালার প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে।
অনুমোদনের পর এটি কার্যকর করা হবে। অপরদিকে, বেতন বৃদ্ধিসংক্রান্ত কমিটির প্রতিবেদন ইতিমধ্যে অর্থমন্ত্রীর কাছে জমা দেয়া হয়েছে। মূল্যস্ফীতির সঙ্গে সমন্বয় করে বেতন বাড়ানো হবে। সংশ্লিষ্ট সূত্রে এসব তথ্য পাওয়া গেছে।
জানা গেছে, বর্ধিত বেতন সমন্বয় করতে বাজেটে অতিরিক্ত পাঁচ হাজার ৩০২ কোটি টাকা বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। ২০১৮-১৯ অর্থবছরের বাজেটে সরকারি চাকরিজীবীদের বেতন-ভাতা খাতে মোট ৫৮ হাজার ৫১২ কোটি টাকা বরাদ্দ রাখা হয়েছে। এ খাতে গত অর্থবছরের বাজেটে বরাদ্দ ছিল ৫৩ হাজার ২১০ কোটি টাকা। এছাড়া গৃহ নির্মাণ ঋণ সুবিধা বাস্তবায়নে সুদ পরিশোধ (ভর্তুকি) খাতে ১৯শ’ কোটি টাকা বেশি বরাদ্দ রেখেছে সরকার।
এ প্রসঙ্গে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের এক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা বলেন, বর্তমান সরকার সরকারি চাকরিজীবীদের যে সহায়তা দিচ্ছে তা বিগত সরকার কোনো সরকারই দেয়নি।
গৃহ নির্মাণ ঋণ ও বেতন বৃদ্ধি ছাড়াও আওয়ামী সরকার সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সময়মত অফিসে যাতায়াতের জন্য ঢাকা মহানগরী ও বিভাগীয় পর্যায়ের পাশাপাশি জেলা পর্যায়ে রাঙামাটিতে স্টাফবাস কর্মসূচী পরিচালনা করা হচ্ছে। স্টাফবাসে যাতায়াতের জন্য বড় বাসে প্রতি কিলোমিটারে ২০ পয়সা ও মিনিবাসে ৪০ পয়সা হারে ভাড়া আদায় করা হয়। এ কর্মসূচীর অধীনে বর্তমানে ৯০ টি বাসের মধ্যে ৬৪টি সরকারের এবং ২৬টি বিআরটিসি হতে ভাড়াকৃত বাস রয়েছে। উক্ত বাসগুলি দ্বারা প্রায় ৯ হাজার ৬৬৪ জন কর্মকর্তা-কর্মচারিকে স্বল্প ভাড়ায় সময়মত অফিসে আনা নেয়া করা হচ্ছে। কর্মরত সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারির নিজের দেশে/বিদেশে জটিল ও ব্যয়বহুল রোগের চিকিৎসায় চাকরি জীবনে এক বা একাধিকবারে সর্বোচ্চ ১ (এক) লাখ টাকা আর্থিক সাহায্য প্রদান করা হয়। হার্ট ষ্ট্রোক, ব্রেইন ষ্ট্রোক, বাইপাস সার্জারী, হার্টে রিং পরানো, ক্যান্সার, কিডনী ডায়ালাইসিস, কিডনী ট্রান্সফার, মারাত্মক দূর্ঘটনাজনিত কারণে অঙ্গহানি ইত্যাদি রোগ এ সাহায্যের আওতায় পড়ে। এ সেবাটি বোর্ডের প্রধান কার্যালয় থেকে পরিচালনা করা হয়। ১৯৬৯ সালের ১২ ফেব্রুয়ারীতে ঢাকার মতিঝিল সরকারি আবাসিক এলাকায় সর্বপ্রথম মহিলা কারিগরী প্রশিক্ষণ কেন্দ্র কাম কমিউনিটি সেন্টারটি চালু করা হয়। সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের স্ত্রী ও কন্যাদেরকে আত্মনির্ভরশীল ও কর্মমুখী শিক্ষায় শিক্ষিত করে গড়ে তোলাই ছিল এর প্রধান লক্ষ্য। প্রজাতন্ত্রের ১১-২০ গ্রেডের কর্মরত সরকারি কর্মচারিদের সন্তানদের সু-শিক্ষায় শিক্ষিত করে গড়ে তোলার জন্য সরকার কর্তৃক প্রদত্ত অনুদান থেকে বছরে একবার নির্দিষ্ট হারে অনধিক দু’সন্তানকে ৬ষ্ঠ শ্রেণি থেকে সর্বোচ্চ পর্যায়ে (মাষ্টার্স/ইঞ্জিনিয়ারিং/মেডিকেলে) অধ্যয়নের জন্য শিক্ষাবৃত্তি প্রদান করা হয়। ভাল ফলাফল অর্জনকারীদেরকে উৎসাহিত করার জন্য দু’টি ক্যাটাগরিতে শিক্ষাবৃত্তি প্রদানের ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। যে সকল ছাত্র-ছাত্রী প্রত্যেক বিষয়ে উত্তীর্ণ হয়ে গড়ে ৮০% ও এর অধিক নম্বর পেয়েছে তাদেরকে বর্ধিত হারে শিক্ষাবৃত্তি এবং প্রত্যেক বিষয়ে উত্তীর্ণ হয়ে গড়ে ৫০% হতে ৭৯% নম্বর পেয়েছে তাদেরকে শিক্ষা সহায়তা প্রদান করা হচ্ছে। সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারি ও তাদের সন্তানদের খেলাধুলার উন্নয়ন এবং পারস্পরিক সৌহার্দ্য ও সম্প্রীতি বৃদ্ধির লক্ষ্যে প্রতি বছর ক্রীড়া প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হয়ে থাকে। সরকারি ও তালিকাভুক্ত স্বায়ত্বশাসিত সংস্থায় কর্মরত, অক্ষম, অবসরপ্রাপ্ত, মৃত কর্মকর্তা-কর্মচারির নিজ ও পরিবারের সদস্যদের জন্য প্রতি বছরে একবার চিকিৎসা সাহায্য হিসেবে ৪ মাসের মূল বেতনের সমপরিমাণ সর্বোচ্চ টাঃ ২০,০০০/- প্রদানের বিধান আছে। কর্মকর্তা-কর্মচারীর বয়স ৬৭ বছর পর্যন্ত এ সাহায্য প্রদান করা হয়। এছাড়া স্মার্টফোন কেনা বাবদ এককালীন এই অর্থ পেতে যাচ্ছেন সরকারের বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী, প্রতিমন্ত্রী, মন্ত্রিপরিষদ সচিব, জ্যেষ্ঠ সচিব, সচিব এবং ভারপ্রাপ্ত সচিব। স্মার্টফোনে যেকোনো ধরনের ইন্টারনেট সার্ভিসই তারা ব্যবহার করতে পারবেন। তবে এক্ষেত্রে বিটিসিএলের নির্দেশকে অগ্রাধিকার দিতে হবে। মন্ত্রী, প্রতিমন্ত্রী এবং উপমন্ত্রীদের ফোন এবং ইন্টারনেট বিল স্ব স্ব মন্ত্রণালয় বহন করবে।
বর্তমান আওয়ামী সরকারের অবদান প্রতিটি ক্ষেত্রেই বিগত সরকার গুলোকে পিছনে ফেলেছে। এমন চলতে থাকলে বাংলাদেশ উন্নত দেশ হিসেবে গড়ে উঠতে বেশি সময় লাগবে না।